ইরানের সর্বোচ্চ ক্ষমতার মালিক প্রেসিডেন্ট নাকি ধর্মীয় নেতা?

পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশের ক্ষমতা কাঠামোয় প্রেসিডেন্ট অথবা প্রধানমন্ত্রীই সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকেন। কিন্তু ইরানে প্রেসিডেন্টের হাতে থাকে নামমাত্র ক্ষমতা। রাষ্ট্রের মূল নিয়ন্ত্রণ থাকে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির হাতে। প্রেসিডেন্ট কে মূলত নির্বাচন প্রকৃয়ার মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

ইরানের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী প্রতিষ্ঠান গার্ডিয়ান কাউন্সিল। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া বা না হওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারাই নিয়ে থাকে। এছাড়াও পার্লামেন্টে পাস হওয়া প্রতিটি বিল এখান থেকেই চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। গার্ডিয়ান কাউন্সিল চাইলেই পার্লামেন্টের পাস হওয়া যেকোনো বিল আটকে দিতে পারে। এটি পরিচালিত হয় ১২ জন সদস্য দ্বারা যাদের ৬ জন পার্লামেন্ট কর্তৃক এবং ৬ জন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা কর্তৃক নির্বাচিত হয়। ধর্মীয় নেতার মূল ক্ষমতার জায়গা এই গার্ডিয়ান কাউন্সিল যেখানে বেশিরভাগ সদস্যই তার অনুগত থাকে। ফলে যেকোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির প্রভাব থাকে।

এছাড়াও, ইরানের কমান্ডার ইন চীফ আয়াতুল্লাহ খোমেনি নিজেই। দেশটির সরকারি পুলিশ ও নীতি পুলিশের প্রধানও তিনি। ইসলামিক রেভুলোশনারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসির কর্তৃত্বও আয়াতুল্লাহ খোমেনির হাতে। যেকোনো বাহিনীকেই কোনো অপারেশনের জন্য তার থেকে অনুমতি নিতে হয় এবং তার কাছেই জবাবদিহি করতে হয়।

তাহলে প্রেসিডেন্টের কাজ কি?

ধর্মীয় নেতার পরেই মূলত তার অবস্থান। সরকারের কার্যক্রম পরিচালনা দায়িত্ব পালন করেন প্রেসিডেন্ট। দেশের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা প্রনয়ণ এবং বাস্তবায়ন তার কাজ। মূলত ধর্মীয় নেতার ডেপুটি হিসেবেই তাকে কাজ করতে হয়। তিনি মন্ত্রী সভার প্রধান এবং রাষ্ট্রের কার্যনির্বাহী প্রধান। এছাড়াও একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ ২২ জন মন্ত্রী প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণে থাকে, তবে মন্ত্রী সভাকে পার্লামেন্ট কর্তৃক স্বীকৃত হতে হয়। এছাড়াও বিভিন্ন নিয়োগের ক্ষমতা থাকে তার হাতে।

ইরানই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে নির্বাহী শাখা সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। নিরাপত্তা ইসুতে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত। দেশের অর্থনীতির জন্য প্রেসিডেন্ট কে দায়ী করা হয়। তিনি পার্লামেন্টের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকেন।